নারী উন্নয়নে দাতাদেশ ও সংস্থা সমূহের একটি পর্যালোচনা পার্ট-২
- 15-Apr-2022 05:15AM
- Zahidul Islam
- 1119
পঞ্চম অধ্যায়
নারী উন্নয়নে বিভিন্ন বাধাসমূহঃ
বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের জন্য সবচাইতে বড় বাধা হলো অর্থ । অর্থের অভাবে নারীদের বিভিন্ন ভাবে হেয় বা ছোট করে দেখতে শিখানো হয় । কারণ নারীরা অর্থ উপার্জনের সুযোগ পায় না । নি¤েœ তার প্রধান প্রধান কারণ গুলো আলোচনা করা হলো ঃ-
অনুন্নত শিক্ষা ব্যবস্থাঃ-
১৯৪৭ সালের স্বাধীনতায় দেশের শাসনভার গেল নব্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাতে । তারা ২৫ বছর শাসন শোষণ করল অপ্রতিহত গতিতে । শোষন করে দেশটাকে একেবারেই খালি করে দিল । ফলে কোন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি ।
এছাড়া বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ না থাকায় শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি । দেশ আজ ৪২ বছর আগে স্বাধীন হয়েছে । তবুও দারিদ্র্যতা তার দুষ্টু চক্রের কবলে পড়ে শিল্পায়নকে অনগ্রসর করে রেখেছে ।
নিরক্ষরতাঃ-
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড । শিক্ষিত জনগন দেশের সম্পদ । শিক্ষা ছাড়া কোন জাতির উন্নতি করা সম্ভব নয় । আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর । অল্পসংখ্যক মানুষই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে পেরেছে । এর কারণ হলো দারিদ্র্যতা । কারণ অনেক ছোট থেকেই এদেশের শিশুদের অর্থ উপার্জনের কাজে লাগতে হয় । এছাড়া অনেক অভিভাবকদের শিক্ষা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বিদ্যালয়ে পাঠানোর ব্যাপারে উদাসীন মনোভাব পরিলক্ষিত দেখা দেয় । এর ফলে তারা নিরক্ষর হিসেবে বড় হয় ।
প্রাকৃতিক দূর্যোগঃ-
এদেশের ভৌগোলিক অবস্থাই এমন যে প্রাকৃতিক দূর্যোগ এদেশের মানুষের নিত্য সহচর । প্রাকৃতিক দূর্যোগকে সঙ্গে নিয়েই এদেশের মানুষের বসবাস । প্রতি বছর অতি বৃষ্টি অনাবৃষ্টি ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙ্গন প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগে এদেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংশপ্রাপ্ত হচ্ছে । মানুষ হচ্ছে নিঃস্ব । হাজার হাজার মানুষের প্রাণ সংহারের সাথে সাথে জাতিকে বা দেশকে সমস্ত প্রাকৃতিক দূর্যোগ দারিদ্র্য ও নিঃস্বতার অভিশাপ উপহার দিচ্ছে ।
অধিক জনসংখ্যাঃ-
দেশের মোট সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা অধিক হলে দারিদ্র্য সেখানে হানা দিবেই । অর্থাৎ অধিক জনসংখ্যাই দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ । মানুষ যতটুকু উৎপাদন করছে,
কিন্তু পারিবারিক প্রয়োজন এতই বেশি হচ্ছে যে তাতে কুলানো যাচ্ছে না । ফলে দিন দিন দারিদ্র্য বেড়েই চলেছে । খাদ্য সংকট নিত্যদিনের সাথী হয়ে বেকারত্বকে বাড়িয়ে দিচ্ছে । এছাড়া বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশের নারীদের সামাজিক ভাবে অবহেলা করা হয় । কারণ তাদের কে সাংসারিক কাজ ছাড়া আর অন্য কোন কাজে লাগানো যায় না বলে ভাবা হয় ।
কুসংস্কারঃ আমাদের দেশে নারী দের নিয়ে বহু কুসংস্কার রয়েছে । তাদের মধ্যে একটি হলো নারীরা যদি শিক্ষা দিক্ষা লাভ করে তবে তারা সংসারী হতে পারবে না । তাই তাদের বেশি শিক্ষিত করা যাবে না । আর শিক্ষা ছাড়া কোন সাহায্যই কাজ লাগবে না ।
ষষ্ঠ অধ্যায়
নারী উন্নয়নের দাতাদের অন্যান্য পদক্ষেপ সমূহঃ
বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের জন্য দাতাদেশ সমূহ যে সমস্ত কাজ করছে তাদের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্ল্যেখ যোগ্য কাজ সমূহঃ-
১। নারীর ভূমিকার মূল্যায়ন
২। পারিবারিক জীবনে কাজের স্বীকৃতি এবং মর্যাদা দান।
৩। নারীর শিক্ষার বিস্তারে ব্যাপক কর্মসূচীগ্রহন ও বাস্তবায়ন ।
৪। অসেচস্তন অভিভাবকের মেয়ে শিক্ষিার সুফল এবং বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহন।
৫। মহিলা শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা।
৬। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী বান্ধব কর্মসূচী গ্রহন।
৭। উপবৃত্তিসহ গরীব মেয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য সম্পদের সুষ্টু বন্টন।
৮। মাতৃ স্বাস্থ্য, শিশুপালন, শিশু মনস্তত্ব বিষয় সচেতনমূলক কার্যক্রম গ্রহন ।
৯। নারীর ক্ষামতায়ন নিশ্চিত কারন।
জাতিসংঘ কর্তৃক নারীর সমতা আনয়ন গৃহীত উল্লেখ যোগ্য পদক্ষেপঃ
১। নারীদের রাজনৈতিক অধিকারের চুক্তি: ১২৫২ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখে পরিষদের ৬৪০সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনুমদিত এবং সাক্ষরিত ।
২। বিবাহিত নারীর জাতীয়তার চুক্তি: ১৯৫৭ সালের ২৯ জানুয়ারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাধারণ পরিষদ কর্তৃক স্বাক্ষরিত এবং অনুমোদিত ।
৩। বিবাহের সম্মতি , বিবাহের ন্যূনতম বয়সসীমা এবং রেজিষ্ট্রেশন সম্পর্কে চুক্তি: ১৯৬২ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে সাধারণ পরিষদে ১৭৫৩ক নম্বর সিদ্ধান্ত স্বাক্ষরিত এবং অনুমেদিত ।
৪। বিবাহের সম্মতি বিবাহের ন্যূনতম ব্য়স সীমা এবং রেজিষ্ট্রেশন সম্পর্কে সুপারিশ ১৯৬৫ সালের ০১ নভেম্বর তারিখের সাধারণ পরিষদের (২০১৮) নম্বর সিদ্ধান্ত।
৪. শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ও প্রচারণার জন্য নানা মুখী কার্যক্রমের উপরে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার, সভা-সমাবেশের প্রতি বেশি গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ভাবে নারীদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে ।
অবশ্য এর সুফল আমরা ধীরে ধীরে পেতে শুরু করেছি । তাই নারীদের প্রতি এখন আর কোন ধরণের অবহেলা আর গ্রহণ করা হচ্ছে না । তারা তাদের নিজেদের ব্যাপারে নিজেরাই ভাবতে শুরু করেছে ।
সপ্তম অধ্যায়
শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে নারীদের সমস্যা দূরীকরণে দাতাদেশের গৃহীত পদক্ষেপঃ
বিশ^ায়নের যুগে নারীরা বেশ বিছু ক্ষেত্রে যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার সন্মূখীন হয় । নি¤েœাক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে আমারা এই সমস্ত সমস্যা দূর করতে পারি ঃÑ
১। নারীর ভূমিকার মূল্যায়ন
২। পারিবারিক জীবনে কাজের স্বীকৃতি এবং মর্যাদা দান।
৩। নারীর শিক্ষার বিস্তারে ব্যাপক কর্মসূচীগ্রহন ও বাস্তবায়ন ।
৪। অসেচস্তন অভিভাবকের মেয়ে শিক্ষিার সুফল এবং বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহন।
৫। মহিলা শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা।
৬। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী বান্ধব কর্মসূচী গ্রহন।
৭। উপবৃত্তিসহ গরীব মেয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য সম্পদের সুষ্টু বন্টন।
৮। মাতৃ স্বাস্থ্য, শিশুপালন, শিশু মনঘÍত্ব বিষয় সচেতনমূলক কার্যক্রম গ্রহন ।
৯। নারীর ক্ষামতায়ন নিশ্চিত কারন।
১০ । সকল দেশের নারীদের সমান সুযোগ দিতে বাধ্য করণ
উপসংহার
বাংলাদেশর নারীদের উন্নয়নের জন্য দাতাদেশ ও সংস্থা সমূহ বিভিন্ন উদ্দ্যোগের পাশাপাশি আমাদের দেশীয় সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করে চলেছে । দাতাদেশ সমূহের যে পরিমান সাহায্য আমরা পাচ্ছি তা যদি সঠিক ভাবে কাজে লাগানো যায় তবে
আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো কাজ করে যাবে । এক্ষেত্রে অসহায় নারীদের জন্য কিছু প্রতিকুলতাকে অর্জন করা সম্ভব হবে । তবেই প্রকৃতপক্ষে নারী উন্নয়ন সাধিত হবে । বর্তমানে বিভিন্ন দাতা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে কাজ করার ফলে গ্রামীণ নারীদের সামাজিক মর্যাদা অনেক বেশি উন্নত হয়েছে।
পাশাপাশি আমাদের দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে দাতা দেশসমূহ ও তাদের সংস্থা গুলো অনেক কাজ করে চলেছে। সুতরাং একথা বলা যেতেই পারে বাংলাদেশে নারীদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দাতা সংস্থার অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গ্রন্থপঞ্জি
১. ড. অনদিকুমার মহাপাত্র রাষ্ট্রবিজ্ঞান
২. ড. এমাজউদ্দিন আহমদ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা
৩. সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান
৪. সৈয়দ মকসুদ আলী রাষ্ট্রীয় সংগঠনের রূপরেখা
৫. ড. মোঃ মকসুদুর রহমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মৌলনীতি
৬. প্রফেসর ইয়াসমিন আহমেদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি